শ্রী মুরারী কিশোর রায়
আও কারার মতন এদ্দিন বাদে একনা মানসি পানুঙ।
কি বাহে কাহা ক্যাদন আছিস?
ভাল্ নাই বাহে বাইও। আগের মতন কি আর আচে বাহে! আগোত কত কি খাইলঙ। এলা উগলার উদ্দিশে নাই। মাতাগাও হাত ঠ্যাঙ এল নটার পটার পটার করে। চইখেও কম দেহঙ। শরীলত বং পাঙ না। ঢুলতে ঢুলতে তোর কাছত আনঙ। একনা আও বাও করির। ম্যালাদিন থাকি দেহা হয় না বাইও।
আসলু ভালে হইল। বইস্ কাহা।
তোর মাক ক তো গুয়া বাটি আনুক। আসনুঙ একনা কতা কবার। বাপরে বাপ! চউখের আগালোত উয়ার মাও বাপের বিয়াও দেকনু বাহে। তাঁয় মুকের আগোত ওকার ওকার করে। মুই থাওয়ে পাঙনা। কয় দিন কার কতা। উয়ার মাও এলাও চেঙরি মানসি। হামার তাওয়াতি ভাই সুরুজ ভাইয়ের বেটি। নিয়া যায়া দিলঙ চাঁন্দের সাথে বিয়াও। দুখান বছর গেইতে না গেইতে ওঁই দুনিয়াত আইল্। এলা উয়ার কতা শুনলে কানত্ হাত দেওয়া নাগে। দেকলু ভূলি গেইচঙ আসল কতা কোনা। বাহে বাইও যেক্না কতা কইম সেকনা এলা কঙ। তোমার বিচন পারা ভিটা খ্যান আচে না তাতে সিমলার গাছটার গোড়ত একনা ট্যাহার ঘড়া আচে। মুই নিজের চোখে দেখচঙ। সেই জন্যে তোক কবার আসনু। ওঁই শুনি দাঁত গুলা ব্যাদরেখা হাসে আর কয়, এই কুড়াটা খাবারও পায়না হাইগ¦ারও পায়না। আরও কয় “যে কতা শুনলে মোর গায়ে আইসে জ্বর, সেই কতা মোর মুককো বরাবর। বুড়ার নাই কাম, আদা কেষ্টর নাম।”
তুই ক কার না গাও জ্বলে। দুই দিনকার হাওয়া তুই, তোর বাপের বিয়াও দেকনু মুই।
তুই কি কোনোদিন দেকচিলু বাহে বাইও? মুই কওয়ার আগোত ফির কওয়া শুরু করিল,
পত্তি শনিবার মঙ্গলবার ট্যাহার ঘড়াটা আইতত বাইর হয়। ট্যাহা গুরা ঝনেঝনে উটে। মুই কত মাননত কচ্চঙ। ফকির ধরচঙ একনা কামও হয় নাই। ওইযে কয়না-“কপালত নাই ঘি, ঠোক ঠোকাইলে হইবে কি!” বায় তোক মনুঙ এলা তোর ব্যাপার। শুনচঙ তোর ঠাকুদার বাপ আম্বলের কতা। সেই সময় ওইগলা পইস্যার চইল আচিল। তোমার ট্যাহা, চান্দির ট্যাহা। এলাসিনে আসনি হয়া গেইচে। “যার বরাতে ফাইন্দবে, নালে নাল হয়া যাইবে, যার কপাল ভাল, হইবে তাঁয় নাল। সগারে ভাগ্যে হয় না, কুড়িয়াও পাওয়া যায় না।” মুই কনুঙ
ও বাহে কাহা, গুয়া পান খাও। দম নেও। খালি তোমরায় কয়া যাবার নাগচেন তোমার মুখ হাউসের না? চা ঠান্ডা হয়া গেইল। চা খাইতে খাইতে কয়,
ওই ট্যাহার সতে আচে ডারাইশ কাট। মাথাত চক্কর দেওয়া। অনজিৎ মইল সাপের কামড়ে। ট্যাহার সাপে কামড়াচে। চায়ের কাপ থুইয়া বাটা গুয়া মুকত দিয়া মুখ পোগলে পোগলে কয় হামারকুর একনা দে খাঙ। ফিরকয় “যার নচিবে থাকিবে, আপনা আপনি আসিবে।” হামার গুলার খালি কওয়ায় সার।
দশটার সময় আসি টঙ্গত বইসচ্চে উটি যারার ফমে নাই। এই দম মানসি দেকঙ নাই। মোর হইল কামের তাল, ওমার খালি বাজে প্যাচাল। ফির কয়,
বায়, বেলা, হইল দুপরা প্যাট উটচে উপরা। যাঙ এলা বাড়ী, শুকি গেইচে নাড়ী। গপ্পো শোনার মানসি নাই, চাইরোদিকে খাই খাই। কাগজের মুড়া, মানসির বুড়া। হামার কতা আর কায় শোনে। আইজকা যাঙ আর একদিন আসিম। যাবার ধরি ফিরি আসি কয়,
ও বাহে বাইও, হামার ছোট চেঙরা অতন তার ফির কি হইচে জানিস? সিমলার গাছটার গোড়ত গত শনিবার দুপরা গরু হাতত ধইচ্চে, দেকে বড় বড় চোখ চউখ ধলা ফল্ফল করে। খাইচে ওয় চিকরি উটি বাড়ি আইচ্চে। আইতত কি জ্বর বাহে! চারখ্যান খ্যাতার টার সয় না। আইততে ফকিরের বাড়ী গেনু। তাবিজ কবজ আননু। তাতো এলাও ভাল নাই। নিঁদতে চকটি উঠে। দাঁত কটরমটর করে কি কি বান্ কয়। এইগ্লা যনতোননা শইল্লে সয় না। একক বার কঙ বাড়ী ছাড়ি চরি যাইম। তাকো পাঙনা। মুই কনুঙ,
ানাগে বাড়ী যার্বা এট্টে কোনা খাওয়া দাওয়া করেন এলা। নম্বা একটা নিকাশ ফ্যালে কয় আচ্চা তাকলে কলু যকন কতাটা।
কাহা তোমার এই বয়সে কত কি করচেন কত কি খচেন। ম্যালা কিচু দ্যাকচেন।
বাহে বাইও, সেগলা কতা তুললু, যেগলা কতা মনত্ ভাসলে দিনও না যায়, আইতো না পোয়ায়। মোর বাতরা গেরাম বাসী জানে। অলপ বয়সে বিয়াও করচঙ, আটটা ছাওয়ার বাপ হইচঙ। চারটা বেটা, টারটা বেটি, শরীল খ্যান এলাও আচে খাটি। মাইনসের ধার ধারঙ নাই, গোটে সোটে করচঙ কাজ কামাই।
শ্যাস বিকেলে খায়া দায়া বুড়ার বেটা বাড়ী বুলি চলি গেইল। মুইও কাম করার নাগি দোলা বাড়ী গেনু।
(আও পত্রিকায় পাঠানো লেখা থেকে)