কৃষ্ণ কমল
বিন্দিয়া রে ? সত্যি তুই মোক ছাড়ি গেলু রে..
তোর জইন্যে মোর এতোকাল ধৈর্য্য ধরি থাকাটা তাইলে কী হইলো..? কতজনে মোক কত কিছু কইছে, মুই কারো কতায় কিছু মনে করং নাই। তুই কী সেইগলে কতা শুনিস নাই..?
-তোক দেকার ছলে পেততেকদিন সকালে তোমার বাড়ি গেইছোং, তোর ঠাকুর দাদার হুকার সিলুমোত আগুন ধরে দিবের জইন্যে। মিছে মিছি পেটের সমস্যার কতা কয়া দিনোতে তিনবের তোমার বাড়ি গেইছোং দাদার কাছোত জল পরা নিবের জইন্যে। এইগলে সউগে মোর ছল আছিল রে বিন্দিয়া। এইগলে সউগ তোক দেকার জইন্যে রে বিন্দিয়া, সউগ তোক দেকার জইন্যে।
-সউগ ভুলিয়ে আইজ তুই মোক ছাড়ি চলি গেলু।
তুই কী একবারো ভাবিস নাই, ক্যানে তোক বাজার থাকি ঝালমুড়ি কিনি খাওয়াইছোং..?
ক্যানে মাইনষের বাড়ি থাকি আন্দার আইতোতে জলপাই চুড়ি করি আনি তোক খাওয়াইছোং...?
ক্যানে বুকের ছাল তুলি মোটা গাছোত চড়ি তেইতোল পাড়ি খোয়াইচোং...?
-পেরায় দিনে তোর মার কাছোত শোনোং যার টেকা পয়সা আছে, তার সাতে তোর বিয়েও দিবে। সেই জইন্যে নিজে না খায়া মেলা টেকা জোগাড় করছোং। কাচা টেকা হাতোত থাইকপের নয় জইন্যে বাজার থাকি ছটকু কাকাক সেই টেকা গুলে দিয়ে পয়সার কয়েন আনি মাটির ব্যাঙটা ভরাইছোং।
কাইয়ো যাতে মোর মনটার জমিত জাগা করি না নিবের পায়, তার জইন্যে কোনোদিন কোনো সাগাইর বাড়ি পর্যন্ত যাং নাই। মুই শুধু তোকে চাইছিনুংরে বিন্দিয়া, শুধু তোকে চাইছিনুং। তোক এক নজর দেখার জইন্যে ঠান্ডার দিনোত বৈকেল বেলা গাও খেন ধুয়ে তোমার বাড়ির পাশোত ওইদ পোহাইছোং। কত ইচ্ছে আছিল, জামাই ষষ্ঠির দিন তোমার বাড়ি জামাই সাজি যাইম। মোর দেওয়া নাল শাড়িখেন পড়ি বেরাবু।
কত আশা আছিল, তোক নিয়ে একনা সুকের ঘর বান্দিম। আইতের বেলা দুইজনে মিলিয়ে চাদ দেখমো। মাঝে মাঝে গলা ছাড়ি দিয়ে মুই ভাওয়াইয়ে গাইম।
কিন্তু কী থাকি কী হইলো রে বিন্দিয়ে। আইজ মোর সউগ আশার মুকোত ছাই ছিটিয়ে দিলু...
তোর মুক ভেংচানির মাঝোত যে মোর পুতি একটা বিষেদ আছিল, তাক মুই বোঝোং নাই রে বিন্দিয়ে, তাক মুই বোঝোং নাই।
যা.. কিছু তো আর কবার নাই। মোর ভালবাসা যদি তোর জইন্যে খারাপ কিছু হয়, তাইলে আর কী কইম। তোক ছাড়া না হয় একলায় জীবনটা কাটে দেইম।
---তয়, যেটে থাকিস, ভালে থাকিস রে বিন্দিয়া, ভালে থাকিস।
কৃষ্ণ কমল
৩১ডিসেম্বর ২০১৮